তৈলাফাং ঝর্ণা খাগড়াছড়ি-
তৈলাফাং ঝর্ণাটি খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গার দুর্গম জনপদ কাতালমনি পাড়ায় অবস্থিত। ৫০ ফুট উঁচু ও ২০ ফুটের অধিক এই ঝর্ণার বিস্তৃত। অর্ধশত ফুট উপর থেকে আঁচড়ে পড়ছে তৈলাফাং ঝর্ণার পানি। যা ইতোমধ্যে পাহাড়ের পর্যটকদের কাছে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ নিতে নতুন সন্ধান পাওয়া ‘তৈলাফাং ঝর্ণা’ দেখতে দুর্গম পথ পারি দিচ্ছেন স্থানীয় পর্যটন পিপাসুরা। ভ্রমণ পিপাসুরা নিজেরাই খোঁজ-খবর নিয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও গাইডের ব্যবস্থা করে ভ্রমণ করছে ‘তৈলাফাং ঝর্ণা’। ঝর্ণায় যাওয়ার পথে দূর পাহাড়ে লেবু, কচু, সেগুন বাগান ও জুমের দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হবেন যেকোন পর্যটক। সবুজ পাহাড় ও গভীর অরণ্য আর ঝর্ণা গুলো মুগ্ধ করবে যেকোনো পর্যটককে।
মেঠোপথ বৃষ্টি হলে হেঁটে যেতে হবে। শুকনো মৌসুমে মোটরসাইকেল যোগে চার-পাঁচ কিলোমিটার যাওয়া যাবে। সেখান থেকে ঝর্ণায় পৌঁছতে জয় করতে হবে ভয়ঙ্কর দুটি পাহাড়। উঁচু পাহাড় থেকে ঝর্ণায় নামার প্রধান ভরসা নিজের হাত ও পা। গাছ, লতাপাতায় অবলম্বন করে সাবধানে নামতে হয়। বৃষ্টিমুখর দিনে বা আগে-পরে গেলে রৌদ্রজ্বল দিনে যাওয়া ভালো। বৃষ্টিতে ভিজা মাটি পিচ্ছিল, নরম হয়ে যায় তাই শক্ত দড়ি নিয়ে নামতে পারলে ভালো।
উঁচু পাহাড় থেকে গাছ ও লতাপাতা অবলম্বন করে ভয়কে জয় করে নিচে নামলেই দেখা মিলবে কাঙ্খিত পাহাড়ি রাজকন্যা ‘তৈলাফাং ঝর্ণা’র। তৈলাফাং ঝর্ণার ঠিক বিপরীতে একটু উপরের রাস্তা পেরিয়ে পাথুরে জঙ্গলের শেষে দেখা মিলবে ছোট-বড় আরো দুটি ঝিরি-ঝর্ণা। তৈলাফাং হতে দূরত্ব ৫০ মিটারের মতো। ঝিরির দুই পাশেই উঁচু পাথুরে মতো পাহাড়। আছে বড় বড় পাথরখণ্ড। পাথুরে দেয়াল বেয়ে নামছে স্রোতধারা।
কিভাবে যাবেন
সিএনজি চালিত অটোরিকশা, মাহিন্দ্র, পিকআপ ও মোটরসাইকেলে সড়ক যোগে মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি হয়ে যাওয়া যাবে তৈলাফাং ঝর্ণায়। পানছড়ি-তবলছড়ি সড়কে প্রিন্সিপালের বাগান থেকে একটু সামনে কাতালমনি পাড়া-ভাইবোন ছড়া সংযোগ সড়কে নামতে হবে। এখান থেকে কাতালমনি পাড়ার দূরত্ব প্রায় ৬/৭ কিলোমিটার। বৃষ্টি হলে পায়ে হেঁটে যেতে হবে। শুকনো আবহাওয়ায় মোটরসাইকেল যোগে ৪ কিলোমিটারের বেশি পাড়ি দেওয়া যাবে। পিচঢালা সড়ক থেকে হেঁটে ঝর্ণায় পৌঁছাতে ঘণ্টা দুই সময় লাগতে পারে। সংযোগ সড়ক থেকে কাঁচা মেঠোপথ ধরে বৌদ্ধবিহার এলাকায় গিয়ে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলে তৈলাফাং ঝর্ণায় নামার পথ দেখিয়ে দিবে।
কোথায় খাবেন
তৈলাফাং ঝর্ণাটি যেহেতু একদম গ্রামীণ প্রত্যন্ত এলাকায় সেহেতু এখানে ভালো মানের দোকানপাট পাবেন না। একটিমাত্র দোকান আছে। চা, বিস্কুট খেতে পারবেন। তবে খাবার, সুপেয় পানিসহ অন্যান্য যা লাগে তা শহর থেকে নিয়ে আসাই ভালো।
কোথায় থাকবেন
খাগড়াছড়িতে বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে, হোটেল শৌল্য সুবর্ন, জিরান হোটেল, হোটেল লিবয়ত,চৌধুরী বাডিং,থ্রী স্টার,ফোর স্টার, উপহার,নিলয় হোটেল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।।
বি: দ্র : ঘুরতে গিয়ে দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না,চিপস এর প্যাকেট, পানির বোতল এবং অপচনশীল দ্রব্য নির্ধারিত স্হানে ফেলুন।। এই পৃথিবী, এই দেশ আমার, আপনার সুতরাং নিজের দেশ এবং পৃথিবীকে সুন্দর রাখা এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও আমার এবং আপনার।। হ্যাপি_ট্রাভেলিং
ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ
Comment (0)